kalbela
২২ জুন ২০২১, ৫:৩৮ অপরাহ্ন
অনলাইন সংস্করণ

বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ

আজ ১০ জানুয়ারি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। ১৯৭২ সালের এই দিনে বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি পাকিস্তানের কারাগারের নির্জন প্রকোষ্ঠ থেকে মুক্তি লাভ করে তার স্বপ্নের স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশে ফিরে আসেন।
বাঙালি জাতি বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জন করে। মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের কারাগারে থেকে মুক্ত-স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে আসার মাধ্যমে সে বিজয় পূর্ণতা লাভ করে। এইদিন স্বাধীন বাংলার আকাশে সূর্যোদয়ের মতো চিরভাস্বর-উজ্জ্বল মহান নেতা ইতিহাসের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ফিরে আসেন তার প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশে।
স্বদেশের মাটি ছুঁয়ে বাংলাদেশের ইতিহাসের নির্মাতা শিশুর মতো আবেগে আকুল হলেন। আনন্দ-বেদনার অশ্রুধারা নামল তার দু’চোখ বেয়ে। প্রিয় নেতাকে ফিরে পেয়ে সেদিন সাড়ে সাত কোটি বাঙালি আনন্দাশ্রুতে সিক্ত হয়ে জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু ধ্বনিতে প্রকম্পিত করে তোলে বাংলার আকাশ-বাতাস। জনগণনন্দিত শেখ মুজিব সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দাঁড়িয়ে তার ঐতিহাসিক ধ্রুপদী বক্তৃতায় বলেন, ‘যে মাটিকে আমি এত ভালোবাসি, যে মানুষকে আমি এত ভালোবাসি, যে জাতিকে আমি এত ভালোবাসি, আমি জানতাম না সে বাংলায় আমি যেতে পারব কিনা। আজ আমি বাংলায় ফিরে এসেছি বাংলার ভাইদের কাছে, মায়েদের কাছে, বোনদের কাছে। বাংলা আমার স্বাধীন, বাংলাদেশ আজ স্বাধীন।’
১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন সদ্যস্বাধীন বাঙালি জাতির কাছে ছিল একটি বড় প্রেরণা। তার এই প্রত্যাবর্তনকে আখ্যায়িত করা হয়েছিল ‘‘অন্ধকার হতে আলোর পথে যাত্রা হিসেবে”। দীর্ঘ সংগ্রাম, ত্যাগ-তিতিক্ষা, আন্দোলন ও আত্মত্যাগের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের পর বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে সামনে এগিয়ে নেয়ার প্রশ্নে বাঙালি জাতি যখন কঠিন এক বাস্তবতার মুখোমুখি তখন পাকিস্তানের বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ দিবাগত রাতে ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণার পর বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করা হয়। ২৯০ দিন পাকিস্তানের কারাগারে প্রতি মুহূর্তে মৃত্যুর প্রহর গুনতে গুনতে লন্ডন-দিল্লি হয়ে মুক্ত-স্বাধীন স্বদেশের মাটিতে ফিরে আসেন বাঙালির ইতিহাসের বরপুত্র শেখ মুজিবুর রহমান। সে থেকে প্রতি বছর কৃতজ্ঞ বাঙালি জাতি নানা আয়োজনে পালন করে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস।
মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের বিজয়ের কয়েক সপ্তাহ পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্বাগত জানাতে লাখো মানুষ উপস্থিত হয়েছিল। সেদিনকার সে ঘটনাটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো বিশ্বের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে সম্প্রচার করে। বঙ্গবন্ধুকে বহনকারী বিমানটি তেজগাঁও বিমানবন্দরে অবতরণ করার দৃশ্যটিকে এনবিসি টেলিভিশনের ভাষ্যকার ‘আজ বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় শেষ হলো’ হিসেবে উল্লেখ করেন।
প্রতিবেদনটিতে বঙ্গবন্ধুকে ‘বাংলাদেশের জর্জ ওয়াশিংটন’ হিসেবে উল্লেখ করা হয় এবং জনগণের এই স্বাগত জানানোর ঘটনাটিকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে বেশি আবেগঘন ঘটনা’ হিসেবে অভিহিত করা হয়। একই সঙ্গে মার্কিন নৌবাহিনীর যে টাস্কফোর্স পাকিস্তানি সামরিক জান্তার সমর্থনে বঙ্গোপসাগরে এসেছিল, বঙ্গবন্ধুর প্রত্যাবর্তনের ঠিক ওই মুহূর্তে সেই মার্কিন নৌবাহিনীর টাস্কফোর্সের বঙ্গোপসাগর ত্যাগের খবরটিও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

অপর একটি আন্তর্জাতিক চ্যানেল এবিসি টিভি একই দিনে সম্প্রচার করে, ‘শেখের বিমানটি ঢাকায় অবতরণের আগে আকাশ থেকেই তিনি তাকে স্বাগত জানাতে অপেক্ষমাণ আনুমানিক ১০ লাখ লোককে দেখতে পান।’ অসংখ্য উল্লসিত মানুষ বঙ্গবন্ধুকে স্বাগত জানাতে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভেদ করে তার দিকে ছুটে যায়।

বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বরাবরের মতো এবারও নানা কর্মসূচি আয়োজন করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- সকাল ৬টা ৩০ মিনিটে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়, বঙ্গবন্ধু ভবন ও সারাদেশে সংগঠনের সকল কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন। সকাল ৭টায় বঙ্গবন্ধু ভবনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন।

বিকেল ৩টায় জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে ক্ষণগণনা কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের অংশগ্রহণ।

এছাড়াও জাতির পিতার ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস যথাযথ মর্যাদায় পালনের জন্য বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা, মহানগর, উপজেলা, থানা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং সংগঠনের সকল সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন কেন্দ্রীয় কমিটির অনুরূপ কর্মসূচির আয়োজন করবে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এক বিবৃতিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের সকল কর্মসূচি যথাযথভাবে পালনের জন্য সর্বস্তরের নেতাকর্মীসহ সংগঠনের সকল সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

৪৩তম বিসিএসের নতুন প্রজ্ঞাপন, বাদ পড়লেন আরও ১৬৮ জন

থার্টি ফার্স্টে আতশবাজি-পটকা ফুটালেই জেল-জরিমানা

আরও দুই সমন্বয়ক ডিবি হেফাজতে

নতুন টেস্ট পোস্ট Kalbela WordPress

Latest News V1.2 WordPress Theme – CodeDokan.Com

Kalbela WordPress Theme – CodeDokan.Com

Jobfia Powerful PHP MicroJobs Script

EPaper Laravel Script – CodeDokan.Com

MLSBD WordPress Theme – CodeDokan.Com

কেন রিভিউ নিলেন না ধোনি?

১০

বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচে আবারও সেই আলিম দার

১১

মোবাইল বিক্রি করে ওষুধ ও খাবার কিনলেন দিনমজুর শাহনাজ

১২

মালয়েশিয়ায় ২৬৬ বাংলাদেশি আটক

১৩

ছাত্রদলের কাউন্সিল ১৪ সেপ্টেম্বর

১৪

বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ

১৫

সোমবার পরীক্ষায় বসছে সাড়ে ২০ লাখ শিক্ষার্থী

১৬