Dhaka , Wednesday, 5 February 2025

মোবাইল বিক্রি করে ওষুধ ও খাবার কিনলেন দিনমজুর শাহনাজ

মোবাইল বিক্রি করে ওষুধ ও খাবার কিনেছেন শরীয়তপুর সদর উপজেলার শাহনাজ বেগম (৫৫)।

শাহনাজ সদর উপজেলা পালং ইউনিয়নের আটিপাড়া গ্রামের আবদুল হাই খন্দকারের স্ত্রী। বৃদ্ধ স্বামী ও ৩ ছেলেসহ পাঁচজন নাতি-নাতনি নিয়ে তাদের সংসার হলেও দুই ছেলেই বাবা-মা থেকে আলাদা।

বড় ছেলে শওকত লিভার ক্যানসার হয়ে চিকিৎসার অভাবে একটি মেয়ে রেখে মারা গেছেন। অভাবের সংসারে তার স্ত্রী অন্যত্র চলে গেছেন। মেঝ ছেলে লিয়াকত খন্দকার (৩৫) রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। স্থানীয় সন্ত্রাসীরা ছোট ছেলে হযরত আলীর (২৮) পা ভেঙ্গে দেয়ায় ইট ভেঙে কোনোরকম সংসার চালান। শনিবার বিকাল পর্যন্ত তাদের কাছে সরকারি কোনো সাহায্য পৌঁছেনি।

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন

শুধু শাহনাজই নন; একই অবস্থা বিরাজ করছে শরীয়তপুর জেলার ৬টি উপজেলায়। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আটকাতে সারা দেশের সঙ্গে শরীয়তপুরে অধিকাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও দোকানপাট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কাজ না পেয়ে দিনমজুর ও শ্রমিকরা বিপাকে পড়েছে।

সরকার নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ঘরে ফেরা কর্মসূচি মাধ্যমে সহায়তা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। অথচ পালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও মেম্বারসহ প্রশাসনের লোকজন এ অসহায় পরিবারের জন্য কেউ এগিয়ে আসেননি।

কথা হয় নড়িয়া উপজেলা আনাখণ্ড গ্রামের রিকশাচালক ইদ্রিস শেখ বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে গত ৪ দিন কাজ করতে পারছি না। তাই খুব কষ্টে আছি। কোনো সাহায্য-সহযোগিতা এখনও পাইনি।

নিরালা আবাসিক এলাকার রিকশাচালক আনোয়ার হোসেন বলেন, রিকশা চালিয়ে ভালোভাবে পরিবার-পরিজন নিয়ে চলছিলাম। গত ৪ দিন বন্ধ থাকায় কোনো কাজ করতে পারছি না। রাস্তায় কোনো যাত্রী নেই। তাই অনেক কষ্টে আছি। ২ দিন পর কিভাবে বাঁচব আল্লাহ জানেন।

এ ব্যাপারে পালং ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের মেম্বার মকফর উদ্দিন বলেন, শাহনাজ বেগমের স্বামী আ. হাই খন্দকারের নামে বয়স্ক ভাতা দেয়া আছে। করোনা উপলক্ষে আমি মাত্র ৩টি কার্ড পেয়েছি। এ কার্ড অন্য গরীবকে দিয়েছি।

শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মাহবুব রহমান বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে শরীয়তপুর সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় শনিবার সকাল থেকে অসহায় হতদরিদ্র নিম্ন আয়ের ৭০০ পরিবারের মধ্যে ১০ কেজি চাল, ৫ কেজি আলু, ১ কেজি লবণ, ১ কেজি মশুর ডাল, ১টি করে সাবান সহায়তা দেয়া হয়েছে। তালিকাগুলো চেয়ারম্যান ও মেম্বার দিয়ে করিয়েছি।

আটিপাড়া গ্রামের শাহনাজ বেগম পেয়েছে কি না জানি না। সেটা ওই এলাকার মেম্বার বলতে পারবেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

মোবাইল বিক্রি করে ওষুধ ও খাবার কিনলেন দিনমজুর শাহনাজ

Update Time : 05:43 pm, Tuesday, 22 June 2021

মোবাইল বিক্রি করে ওষুধ ও খাবার কিনেছেন শরীয়তপুর সদর উপজেলার শাহনাজ বেগম (৫৫)।

শাহনাজ সদর উপজেলা পালং ইউনিয়নের আটিপাড়া গ্রামের আবদুল হাই খন্দকারের স্ত্রী। বৃদ্ধ স্বামী ও ৩ ছেলেসহ পাঁচজন নাতি-নাতনি নিয়ে তাদের সংসার হলেও দুই ছেলেই বাবা-মা থেকে আলাদা।

বড় ছেলে শওকত লিভার ক্যানসার হয়ে চিকিৎসার অভাবে একটি মেয়ে রেখে মারা গেছেন। অভাবের সংসারে তার স্ত্রী অন্যত্র চলে গেছেন। মেঝ ছেলে লিয়াকত খন্দকার (৩৫) রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। স্থানীয় সন্ত্রাসীরা ছোট ছেলে হযরত আলীর (২৮) পা ভেঙ্গে দেয়ায় ইট ভেঙে কোনোরকম সংসার চালান। শনিবার বিকাল পর্যন্ত তাদের কাছে সরকারি কোনো সাহায্য পৌঁছেনি।

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন

শুধু শাহনাজই নন; একই অবস্থা বিরাজ করছে শরীয়তপুর জেলার ৬টি উপজেলায়। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আটকাতে সারা দেশের সঙ্গে শরীয়তপুরে অধিকাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও দোকানপাট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কাজ না পেয়ে দিনমজুর ও শ্রমিকরা বিপাকে পড়েছে।

সরকার নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ঘরে ফেরা কর্মসূচি মাধ্যমে সহায়তা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। অথচ পালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও মেম্বারসহ প্রশাসনের লোকজন এ অসহায় পরিবারের জন্য কেউ এগিয়ে আসেননি।

কথা হয় নড়িয়া উপজেলা আনাখণ্ড গ্রামের রিকশাচালক ইদ্রিস শেখ বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে গত ৪ দিন কাজ করতে পারছি না। তাই খুব কষ্টে আছি। কোনো সাহায্য-সহযোগিতা এখনও পাইনি।

নিরালা আবাসিক এলাকার রিকশাচালক আনোয়ার হোসেন বলেন, রিকশা চালিয়ে ভালোভাবে পরিবার-পরিজন নিয়ে চলছিলাম। গত ৪ দিন বন্ধ থাকায় কোনো কাজ করতে পারছি না। রাস্তায় কোনো যাত্রী নেই। তাই অনেক কষ্টে আছি। ২ দিন পর কিভাবে বাঁচব আল্লাহ জানেন।

এ ব্যাপারে পালং ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের মেম্বার মকফর উদ্দিন বলেন, শাহনাজ বেগমের স্বামী আ. হাই খন্দকারের নামে বয়স্ক ভাতা দেয়া আছে। করোনা উপলক্ষে আমি মাত্র ৩টি কার্ড পেয়েছি। এ কার্ড অন্য গরীবকে দিয়েছি।

শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মাহবুব রহমান বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে শরীয়তপুর সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় শনিবার সকাল থেকে অসহায় হতদরিদ্র নিম্ন আয়ের ৭০০ পরিবারের মধ্যে ১০ কেজি চাল, ৫ কেজি আলু, ১ কেজি লবণ, ১ কেজি মশুর ডাল, ১টি করে সাবান সহায়তা দেয়া হয়েছে। তালিকাগুলো চেয়ারম্যান ও মেম্বার দিয়ে করিয়েছি।

আটিপাড়া গ্রামের শাহনাজ বেগম পেয়েছে কি না জানি না। সেটা ওই এলাকার মেম্বার বলতে পারবেন।